কলম্বাস প্রথম কিউবা এসেছিলেন ১৪৯২ খ্রীষ্টাব্দে। তারও প্রায় বিশ বছর পর শুরু হল কিউবা দখলের প্রথম অভিযান। এস্পানিওল কাপিতান দিয়েগো ভেলাজকেজের নেতৃত্ত্বে, চারটি রণতরী ধেয়ে এলো হিস্পানিওলা থেকে। মোটে চারশো জন রিসালা নিয়ে ভেলাজকেজ কিউবা দখল করলেন। আদিবাসী তাইনো-রা তাদের কুটিরে মুখ লুকালো।
ভেলাজকেজ সত্যিকারের বীর ছিলেন। তিনি আদিবাসীদের ওপর অত্যাচারকে কঠোর হাতে নিষিদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু রক্তলোলুপ এস্পানিওল যোদ্ধাদের কেই বা সামলাতে পারে। তারা আদিবাসীদের প্রতি নৃশংস অত্যাচার করতে শুরু করল। তাইনো আদিবাসীরা প্রথম হকচকিয়ে গয়ে পালাতে চেষ্টা করল। তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইল। ‘হাতুয়ে’ ছিলেন সেরকম একজন তাইনো মোড়ল। সাহসী, বীর, এবং একরোখা। হাতুয়ের নেতৃত্ত্বে কিউবায় প্রথম আদিবাসী বিদ্রোহ হয়।
এস্পানিওলরা এই বিদ্রোহকে নৃশংস ভাবে দমন করল। হাতুয়েকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হল। আদিবাসীদের নিয়োজিত করা হল খনিতে খামারে।
পোপ ততদিনে দাসপ্রথাকে নিষিদ্ধ করেছেন। অতএব এস্পানিওলরা এক বিচিত্র পন্থা অবলম্বন করলে। ‘এনকমিয়েন্দা’। খ্রীষ্টধর্ম শেখানোর নাম করে হাজার হাজার আদিবাসীকে সোনার খনিতে কাজে লাগানো হল। ‘আদিবাসীদের দূত’ বার্তোলোমিও দে লা কাসাস ১৫৫০ সালে স্পেনের রাজার কাছে দরবার করলেন এই দুঃসহ প্রথার বিরুদ্ধে। ততদিনে অবশ্য অনেক দেরি হয়ে গেছে।
‘এনকমিয়েন্দা’ ব্যাবস্থা যখন শেষ হয় তখন মাত্র পাঁচ হাজার তাইনো আদিবাসী বেঁচে। ততদিনে ক্ষেতে, খামারে, খনিতে কাজ করার জন্য আফ্রিকা থেকে দাস আমদানী শুরু হয়ে গেছে।