অকাল বোধন

দেখতে দেখতে দশ বছর কেটে গেছে। এবার চতুর্থীর দিন অফিসে প্রাক-পুজো ফিস্ট ছিলো। কাননদি যথারীতি রসিয়ে রান্না করেছিলেন। কাননদি আমাদের যৌথ কিচেনের দায়িত্ত্বে আছেন। তার রান্নার হাত যতটা ভালো তত ভাল অঙ্ক কষতে পারলে আমি ফিল্ড্স পেতাম!

এই টিমটা একটা পরিবারের মত হয়ে গেছে। একজনের শরীর খারাপ হলে আরেকজন নিজে থেকে ওষুধ কিনে আনে। একজন বাইরে গেলে সে বাকিদের জিজ্ঞেস করে ‘কিছু আনতে হবে?’ মাঝে মাঝে ছোটখাট ট্রিপের পরিকল্পনা হয়। অফিসে আপাতত চা, কফি ফ্রি। সকালে, দুপুরে, বিকেলে খাওয়ার ব্যবস্থা সরকারী দামে।

এরা সবই বাংলার তরুণ তরুণী। কামাই নেই, দেরীতে ঢোকা নেই, বাজে কথায় সময় নষ্ট নেই, সারা সপ্তাহ ধরে এরা সকলেই আনন্দ করে পরিশ্রম করে। সবচেয়ে বড় কথা এরা সকলেই ভাবে কি করে তাদের কাজটা আরো সুন্দর হতে পারে। সফট্ওয়্যার ডেভেলেপমেন্ট টিমের লোকজন মাথা খাটায় কি করে আরো ভালো algorithm-এ প্রোগ্রাম করা যায়। মার্কেটিং টিমের লোকজন চিন্তা করে যে আরো সৃজনশীল ভাবে কি করে উপভোক্তার কাছে পৌঁছতে পারি। শিক্ষক চিন্তা করেন আরো ভালো করে কি পড়ানো যেতে পারে।

যারা বলেন বাঙালি কুঁড়ে, সময়ের ঠিক নেই, ফাঁকিবাজ, তাদের কারোর কথা তাই আর বিশ্বাস করি না। উপযুক্ত কাজের পরিবেশ আর ভালো কাজ করার সুযোগ থাকলে, বাঙালির সাথে কাজ করা বরং অত্যন্ত আনন্দের। কাজের ফাঁকে আলোচনা – আড্ডা অনেক বেশী মজার। তাতে রবীন্দ্রনাথ থেকে সুমন প্রায়ই উঁকি মারেন। সামান্য চায়ের ব্রেকও তাই আনন্দের।

এই অতিমারীর যুগে সেই আনন্দের অকাল বোধন হোক।

Leave a Comment

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.