সেই যে সেই বাঙালির পাঁঠা। যার সুবাসে মমতা বুদ্ধ এক হয়ে যায়, মোদী কানহাইয়াকে চুমু খায় আর আমাগো বাঙাল ঘটি মাতাল হয়ে খালাসিটোলায় পদ্য লেখে। সেই পাঁঠার গপ্পো।
খুব দুরে নয়। কলেজস্ট্রিট ক্রসিং থেকে বৌ বাজারের দিকে হাঁটতে থাকো। মেডিকেল কলেজকে ডান হাতে ফেলে ওয়েলিংটনের দিকে। কবি বলেছেন বাম ফুটপাতে সিদ্ধি লাভ! অর্থাৎ কিনা আদি ও অকৃত্রিম কচি পাঁঠার স্বর্গ। আর যদি চাও খাসি, তাহলে আরো কয়েক কদম হাঁটতে হবে। হাজি সাহেবের মাংসের দোকান মোড়ের মাথায়। চর্বি এমন যে জিভে দিলে গলে মাখন।
কচি পাঁঠার যে সহজ সরল ঝোল, তার অপার মহিমা বর্ণনা করতে গিয়ে কবি লিখেছেন, ‘সখি, কোন আলো লাগল চোখে’। সেই নরম হাড়ে ঠোঁট আর দাঁতের যুগল চাপ। এই একটু খানি। সরাৎ করে নলিটা জিভ বেয়ে সটান পাকস্থলি অবধি।
এমনি আধ হাত লম্বা জিভ নিয়ে এবার গ্রীষ্মে ফিরছি কলকাতায়। তিনমাসের জন্য। আর সেই তিনমাসে কেমন ভোজসূয় যজ্ঞ হতে পারে, তারই ফন্দি ফিকির এই লেখায়।
প্রথম পর্বে মাছের গল্প হয়েছে। এই পর্বে পাঁঠার হাতছানি পেরিয়ে মুরগির দিকে আমরা যাবো।
দেখো, ব্রয়লারের মুরগিকে আমি মুরগিই বলি না। ওসব বিলিতি যান্ত্রিকতা আমার ধাতে সয় না। সহজ সিধা বঙ্গ সন্তান। মুরগি বলতে, দিশিই বুঝি।
দিশি মুরগির ঝোল বানায় বটে আমাদের কল্যাণির আপ্যায়নে। স্টেশন থেকে নেমে মাত্র মিনিট দুয়েকের হাঁটা। দামও এমন কিছু নয়। বাটি ভরে মাংস। সঙ্গে লাগসই ঝাল। আহা! কলকাতার মধ্যে, শেয়ালদার ‘আহার’এও দিশি মুরগি করে বেশ ঘোরালো রকম।
এই আহারের কথা বলতে বলতে, মনে পড়ে গেল আমাদের গোলবাড়ির কথা। মরা হাতি লাখ টাকা। নাঃ সেই সুদিন আর নেই গোলবাড়ির। তবু এখনো গোলবাড়ির মটন (মাটন নয়কো) কষা দাদার লর্ডসের ব্যালকনি। তবে পরিমাণে যদি বেশি চাও তবে মিত্র কাফেতে চলে এসো। শোভাবাজারের কাছে। সেই গোলবাড়িরই কষা, কিন্তু দামে কম এবং বহরে বেশি।
নিতান্ত যখন মিত্র কাফে অবধি এলেই, তাহলে অনাদি কেবিনটাই বা বাদ যায় কেন। চিংড়ির কাটলেট গত বছরও ষাট টাকা ছিল। আর বড়টা একশো কুড়ি। সে সব কাটলেট, আমাদের প্রবাদপ্রতীম কঙ্কদার ভাষায়, তোমরা তো চোখেই দেখনি।
এবার দেখো, দোষটা আমার নয়। অনাদি কেবিন অবধি তুমি তো এসেই গেছ। আর দুকদম আসতে দোষ কি? নিরঞ্জনাগার গিরীশপার্কের মোড়ে। ফিশফ্রাই নিয়ে, ‘জয় কালি’ বলে বসে যাও। জিভের আগায় একটু কাসুন্দি ছুঁইয়ে চলতে থাকুক তোমার কলকাতা ফ্যান্টাসি।
ক্রমশঃ
কমেন্ট করুন, সাবস্ক্রাইব করুন, মেট্রোজিল খান, এবং খেতে থাকুন 😉
Broiler niye ja bolli, or theke boro kotha ar hoyna! Broiler er taste kirom alu-alu na?
LikeLike
যা বলেছিস…
LikeLike